Breaking News
recent

ইউটিউবে ভিডিও র‍্যাংক করতে পেইড ভিউ কতটুকু কার্যকর?



আজকাল ইউটিউব মার্কেটারদের মধ্যে একটি কমন আলোচনার বিষয় পেইড ভিউ বা পেইড মার্কেটিং। পেইড ভিউ নিয়ে বেশ কিছু গ্রুপ পোস্ট এবং কনভার্সেশন হয়েছে ইতোমধ্যে, অনেকরকম সোর্স দেখিয়েছে অনেকেই। আমিও আমার কোর্সের শেষ মডিউলে ৪টা বড় বড় পেইড মার্কেটিং সোর্স বিস্তারিত দেখাই। কিন্তু এরপরেও নতুন ইউটিউব মার্কেটারদের মনে প্রশ্ন থেকেই যায় যে পেইড ভিউ কোথায় থেকে নিব, আর যদি ইনভেস্ট করার মত সামর্থ্য না থাকে তাহলে পেইড ভিউ ছাড়া কি আমার ভিডিও র‍্যাংক করবেনা? আজ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

পেইড ভিউ কি?

আসলে ইউটিউব মার্কেটিং-এ পেইড ভিউ কথাটা ২ রকম ভিউকে নির্দেশ করে। যেমন-
১। আপনি আপনার ইউটিউব ভিডিওকে প্রোমোট করে পেইড অ্যাডভার্টাইজিং করলে যেই ভিউ পাবেন সেটা।
২। বিভিন্ন জায়গা থেকে আপনি ফিক্সড প্রাইসে ফিক্সড এমাউন্টের ভিউ কিনতে পারেন, যেটাকে আমরা রোবটিক কিংবা অটোমেটিক ভিউ বলে থাকি।
পেইড ভিউ বলতে এই ২ রকমই বুঝায়। তবে এই ২ ধরনের ভিউয়ের ব্যবহার এবং রেজাল্ট ভিন্ন ভিন্ন। তাই আপনার জন্য কোনটা ভাল সেটা আপনাকে বিবেচনায় রাখতে হবে।

কোথায় থেকে পেইড ভিউ নিতে পারি?

উপরেই বলেছি আপনি আপনার ইউটিউব ভিডিওকে যেকোন বড় অনলাইন অ্যাডস প্ল্যাটফর্ম থেকে পেইড অ্যাডস-র মাধ্যমে প্রোমোট করতে পারেন। বড় বড় অনলাইন অ্যাডস নেটওয়ার্কের মধ্যে আমাদের দেশে জনপ্রিয় হল ফেসবুক, গুগল অ্যাডওয়ার্ড, বিং এবং রেডিটের মত প্ল্যাটফর্মের অ্যাড ফিচারস। আপনি চাইলেই এইসব নেটওয়ার্কে অ্যাড তৈরীর মাধ্যমে নিজের ভিডিওতে ভিউ আনতে পারেন। যেহেতু এই নেটওয়ার্কগুলোতে প্রচুর অনলাইন ট্রাফিক রয়েছে, তাই আপনি যখন অ্যাড রান করবেন, তখন আপনি আপনার ভিডিওতে টার্গেটেড রিয়েল ভিউ পাবেন, ফলে আপনার ভিডিওতে সত্যিকারের ভিউয়াররা লাইক, কমেন্ট কিংবা সাবস্ক্রাইব করতে পারবে।
আবার, অনেকেই অ্যাড নেটওয়ার্কের তুলনামূলক বেশি খরচের কথা মাথায় রেখে কিছু থার্ড পার্টি থেকে ভিউ সার্ভিস নেয়। বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ছাড়াও অনেক মার্কেটপ্লেসে বিভিন্ন ফ্রীল্যান্সাররা এই ধরনের অটোমেটিক ভিউ দেওয়ার সার্ভিস দিয়ে থাকে। এইসব সার্ভিসে মূলত আপনাকে একটা ফিক্সড রেটে ফিক্সড এমাউন্টের ভিউ দেওয়ার নিশ্চয়তা দেয়। সাধারনত পেইড অ্যাড রান করলে আপনি নির্দিষ্ট কত ভিউ পাবেন সেটা নিশ্চিত করে আগেই বলা যায়না, কারন এখানে রিয়েল ভিউয়ারের ক্লিক করে ভিডিও দেখা না দেখার উপর সবকিছু নির্ভর করে। কিন্তু অটোমেটিক ভিউ কিনলে আপনি একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক ভিউ পাবেনই পাবেন। তবে এই ভিউগুলো সত্যিকারের কোন মানুষের ভিউএর মত হবেনা। কারন এই ভিউগুলো বিভিন্ন সফটওয়্যার কিংবা বিভিন্ন ট্রিক ব্যবহার করে জেনারেট করা হয়। তাই আপনি এই ভিউগুলো থেকে ন্যাচারাল লাইক কমেন্ট ইত্যাদি পাবেন না।

অ্যাড নেটওয়ার্ক এবং ভিউ সেলিং সার্ভিসের পার্থক্যঃ কোনটা আমার জন্য ভাল?

পার্থক্যটা খুব সহজ। অ্যাডের ক্ষেত্রে আপনি অ্যাড নেটওয়ার্ককে (মনে করেন, ফেসবুককে) টাকা দিচ্ছেন যেন তারা আপনার পোস্টকে তার বিশাল ট্রাফিকের সামনে পৌছিয়ে দেয়। হাজার হাজার মানুষ যখন আপনার পোস্ট দেখবে, তখন তাদের ভাল লাগা কিংবা খারাপ লাগার উপর নির্ভর করে তারা আপনার ভিডিওতে ক্লিক করে ভিউ করবে, লাইক/কমেন্ট করবে। আপনার ভিডিও ভাল না লাগলে কেউ দেখবেনা, ভাল লাগলে দেখে শেয়ার দিবে। সুতরাং এখানে আপনি কোন ভিউয়ারকে সরাসরি টাকা দিচ্ছেন না।
কিন্তু ভিউ সেলিং সার্ভিস যেই ধরনের ভিউ দেয়, সেক্ষেত্রে আপনি মূলত প্রতিটা ভিউয়ারকে টাকা দিয়ে ভিডিও দেখাচ্ছেন। আপনার ভিডিওতে তাদের কোন ইন্টেরেস্ট নাই, তারা টাকার বিনিময়ে ভিডিও দেখছে। অনেকক্ষেত্রে তো আপনি পুরোই রোবট দ্বারা ভিডিও ভিউ পাচ্ছেন।
কোনটা ভাল হবে, এই প্রশ্নের উত্তর একবারে দেওয়াটা অনুচিত, কারন একেক নিশ এবং কনটেন্ট একেকরকম। তাছাড়া ইনভেস্টমেন্ট সামর্থেরও ব্যাপার আছে। আপনি যদি এখনো ভাল কোয়ালিটির ভিডিও বানাতে না জানেন এবং আপনার কাছে ১০০-২০০ ডলারের ইনভেস্টমেন্ট না থাকে, তাহলে আপনার উচিত হবে পেইড অ্যাডস (যেমন অ্যাডওয়ার্ড কিংবা ফেসবুক) নিয়ে কাজ না করা। কারন খারাপ ভিডিও দিয়ে আপনি অ্যাড দিলে শুধু শুধু টাকা নষ্ট হবে। এই ক্ষেত্রে আপনি অল্প টাকায় থার্ড পার্টি থেকে কিছু ভিউ কিনে আপনার চ্যানেলকে একটু বুস্ট দিতে পারেন। তবে ভিডিও খারাপ হলে, যতই ভিউ কিনেন না কেন, সেটা র‍্যাংক করে আরো অর্গানিক ভিউ নিয়ে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। সুতরাং সেরকম ভ্রান্ত ধারনা নিয়ে অযথা টাকা খরচ করবেন না। বরং ভিডিও বানাতে থাকুন এবং কোয়ালিটি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিন।

পেইড ভিউ ছাড়া ভিডিও র‍্যাংক করে কিনা

আগে বুঝে নিন পেইড ভিউ নিলে লাভ কি। ইউটিউব মূলত সকল নতুন ভিডিওকেই বিচার-বিবেচনা করে সেটাকে যত বেশি সংখ্যক মানুষের সামনে দেওয়া যায় কিনা সেটা নির্ধারন করে। কিন্তু প্রচুর কম্পিটিশনের কারনে আপনার নতুন একটা ভিডিওতে ইউটিউবের নজর কখন পড়বে তা বলা মুশকিল। হতে পারে আপনি ভিডিও আপলোড দেওয়ার ২ মাস পরে ইউটিউব এটাকে বিবেচনায় নিয়ে তারপর র‍্যাংক দিবে। এই অনিশ্চিত লম্বা সময়কে এড়াতেই মুলত আমরা পেইড ভিউয়ের দিকে ঝুকি। আপনি যেভাবেই ভিডিওতে শুরুতে ভিউ আনেন না কেন, এটা মূলত ইউটিউবের সামনে আপনার ভিডিওকে দ্রুত নজরে আনার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। অর্থাৎ আপলোডের সাথেই সাথেই একটা ভিডিওতে ভাল ভিউ আসা শুরু করলে এবং একইসাথে সেই ভিউয়ারদের ফিডব্যাক ভাল হতে থাকলে ইউটিউব অটোমেটিক সেই ভিডিওকে অন্যান্য ভিডিওর উপরে রেখে গুরুত্বের সাথে বিচার করা শুরু করে। সুতরাং পেইড ভিউ ছাড়াও যেমন ভিডিও র‍্যাংক করে, তেমনি পেইড ভিউ দিলেই ভিডিও র‍্যাংক করে সেটাও সত্য নয়।

সুতরাং আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনাদের পেইড ভিউ নিয়ে কনফিউশনগুলো দূর হবে। পরিশেষে যেই টিপসটি দিতে চাইঃ আপনার ভিডিও মেকিং কোয়ালিটির দিকে বেশি নজর দিন, তাতে আপনার পেইড প্রোমোশনের খরচ নিজে থেকেই কমতে শুরু করবে।
minesoftech

minesoftech

No comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.